১. আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসুলের আনুগত্য কিভাবে করতে হবে?
➡ কোরআনের জবাব:
(৪:৮০) "যে রাসুলের আনুগত্য করলো, সে তো আসলে আল্লাহরই আনুগত্য করলো।"
(৬:১৫৫) "এটি একটি কিতাব যা আমি অবতীর্ণ করেছি—আশীর্বাদস্বরূপ। সুতরাং, একে অনুসরণ করো এবং সাবধান হও, যাতে তোমাদের প্রতি রহমত হয়।"
(৩৩:৩৬) "যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসুল কোনো বিষয়ে ফয়সালা করেন, তখন কোনো মুমিন পুরুষ ও নারীর সে বিষয়ে নিজের কোনো মতামত থাকা উচিত নয়।"
👉 তাহলে কিভাবে আনুগত্য করবো?
➡ আল্লাহ কিতাব নাজিল করেছেন, সেটাকে অনুসরণ করাই আনুগত্য। রাসুলও কেবল এই কিতাবের অনুসারী ছিলেন। তাই কোরআন অনুসরণ করলেই আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করা হবে।
আরো সহজ ভাবে বলি ;
আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের (পূর্ববর্তী সমস্ত নবীদের) আনুগত্য কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী করতে হবে। কুরআনে বারবার বলা হয়েছে যে, আল্লাহর আনুগত্য করা মানে তাঁর দেওয়া বিধান মেনে চলা, আর রাসুলের আনুগত্য করা মানে সেই বিধান অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা।
🔹 কুরআন কী বলে?
কুরআনে আল্লাহ বলেছেন—
১. "আল্লাহ এবং তাঁর রাসুলের আনুগত্য করো।"
📖 সূরা আন-নিসা ৪:৫৯ ➜
"হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং রাসুলের এবং তোমাদের মধ্যকার কর্তৃপক্ষের আনুগত্য করো।"
এখানে 'রাসুলের আনুগত্য' মানে তিনি যে বার্তা (কুরআন) এনেছেন, তা মেনে চলা।
২. "যে রাসুলের আনুগত্য করলো, সে আল্লাহরই আনুগত্য করলো।"
📖 সূরা আন-নিসা ৪:৮০ ➜
"যে রাসুলের আনুগত্য করলো, সে আল্লাহরই আনুগত্য করলো।"
এটা পরিষ্কার করছে যে, রাসুল নিজে থেকে কিছু বলেননি, বরং আল্লাহর নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছেন।
৩. "রাসুলের দায়িত্ব কেবল বার্তা পৌঁছানো।"
📖 সূরা আল-মায়েদা ৫:৯৯ ➜
"রাসুলের দায়িত্ব তো কেবল বার্তা পৌঁছে দেওয়া।"
এর মানে, আনুগত্য হবে আল্লাহর বিধানের প্রতি, যা রাসুল কুরআনের মাধ্যমে দিয়েছেন।
🔹 কিভাবে আনুগত্য করতে হবে?
✅ আল্লাহর আনুগত্য
➝ কুরআনের বিধান মেনে চলা
➝ সৎ ও ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপন করা
➝ একমাত্র আল্লাহকে প্রভু ও আইনদাতা হিসেবে মানা
✅ রাসুলের আনুগত্য
➝ কুরআনের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখা
➝ কুরআনের আদেশ অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করা
➝ কোনো প্রচলিত ভ্রান্ত মতবাদ বা মনগড়া কথা অনুসরণ না করা
❌ ভুল পদ্ধতি যা পরিহার করা উচিত
⚠ রাসুলের নামে বিভিন্ন ভিত্তিহীন কথা ও গল্প বিশ্বাস করা
⚠ কুরআনের বাইরে অতিরিক্ত ধর্মীয় বিধান তৈরি করা
⚠ রাসুলকে আল্লাহর সমান মর্যাদা দেওয়া বা তাঁকে আল্লাহর প্রতিনিধি ভাবা
🔥 সংক্ষেপে
✔ আল্লাহর আনুগত্য = কুরআনের বিধান পালন
✔ রাসুলের আনুগত্য = কুরআন অনুযায়ী চলা
✔ কোনো মনগড়া গল্প, হাদিস বা ফতোয়ার অনুসরণ নয়, বরং কুরআনই চূড়ান্ত মাপকাঠি
📖 "আমি তোমাদের প্রতি এই কিতাব (কুরআন) নাযিল করেছি, যা সমস্ত বিষয়ে ব্যাখ্যা প্রদান করে।"
— সূরা আন-নাহল ১৬:৮৯
তাহলে, আল্লাহর ও রাসুলের আনুগত্য করতে চাইলে কুরআনই একমাত্র পথনির্দেশিকা। 🚀
২. রাসুলের মধ্যে উত্তম আদর্শ কী?
➡ কোরআনের জবাব:
(৬৮:৪) "নিশ্চয়ই তুমি মহান চরিত্রের অধিকারী।"
(৩৩:২১) "নিশ্চয়ই রাসুলুল্লাহর মধ্যে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ রয়েছে, তার জন্য যে আল্লাহর সন্তুষ্টি ও কিয়ামতের দিনের আশা রাখে এবং আল্লাহকে অধিক স্মরণ করে।"
👉 উত্তম আদর্শ কী?
➡ রাসুলের উত্তম চরিত্র কী ছিল, সেটা কোরআনই ব্যাখ্যা করেছে:
- ✅ অন্যায়ের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো (২৫:৫২)
- ✅ মানুষের প্রতি দয়া ও নম্রতা (৩:১৫৯)
- ✅ সৎ ও সত্যবাদী হওয়া (৩৩:৭০)
- ✅ কিন্তু কখনো অন্যায়ের সাথে আপস না করা (৬০:৪)
- ✅ কোনো বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করা (৪:১৭১)
📌 অর্থাৎ, কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবন যাপন করাই রাসুলের উত্তম আদর্শ অনুসরণ করা।
৩. কোরআন মানলে রাসুলকে মানা হয়, কিন্তু সেটা কিভাবে?
➡ কোরআনের জবাব:
(৪:১০৫) "নিশ্চয়ই আমি তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যাতে তুমি মানুষের মধ্যে আল্লাহ যা দেখিয়েছেন, তা দ্বারা বিচার করতে পারো।"
(৫:৪৮) "আমি তোমার প্রতি কিতাব নাজিল করেছি সত্যসহ, যা পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়নকারী এবং তার রক্ষাকারী। সুতরাং, তুমি এর দ্বারা তাদের মধ্যে বিচার করো যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন এবং তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ কোরো না।"
(৪৬:৯) "বলো, আমি নতুন কোনো রাসুল নই এবং আমি জানি না আমার ও তোমাদের সঙ্গে কী করা হবে। আমি কেবল যা ওহি করা হয়, তারই অনুসরণ করি এবং আমি স্পষ্ট সতর্ককারী।"
📌 কোরআন রাসুলকে কী করতে বলেছে?
- ✅ কোরআনের বিধান অনুযায়ী বিচার করতে (৪:১০৫)
- ✅ কেবল কোরআন অনুসরণ করতে (৪৬:৯)
- ✅ কোরআনকে একমাত্র বিধান হিসেবে গ্রহণ করতে (৫:৪৮)
👉 তাহলে কোরআন মানলে রাসুলকে মানা হয় কিভাবে?
➡ রাসুলও কেবল কোরআন মেনে চলতেন, তাই কোরআন অনুসরণ করাই রাসুলকে অনুসরণ করা।
উপসংহার:
✅ আল্লাহ ও রাসুলের আনুগত্য করা মানে কোরআন মানা (৪:৮০, ৬:১৫৫)
✅ রাসুলের উত্তম আদর্শ মানে কোরআনের আদর্শ মানা (৩৩:২১, ৬৮:৪)
✅ রাসুল কেবল কোরআনই অনুসরণ করেছেন, তাই কোরআন মানলেই রাসুলকে মানা হয় (৪:১০৫, ৫:৪৮, ৪৬:৯)
📌 সুতরাং, কোরআনের বাইরের কোনো
উৎস থেকে দ্বীনের বিধান গ্রহণ করা কোরআনের শিক্ষার পরিপন্থী।
রাসুলকে আল্লাহর সমান মর্যাদা দেওয়া বা তাঁকে আল্লাহর প্রতিনিধি ভাবা কেন ভুল?
কুরআনে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ একক শাসক ও সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী, এবং রাসুল তাঁর বার্তাবাহক মাত্র। কিন্তু অনেক মানুষ রাসুলকে এমনভাবে উপস্থাপন করে যা তাঁকে আল্লাহর সমতুল্য বা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে দাঁড় করায়। এটি কুরআনের দৃষ্টিতে স্পষ্ট শিরক বা ভুল ধারণা।
🚨 কুরআনের বক্তব্য:
১️⃣ রাসুল শুধুমাত্র বার্তাবাহক, তাঁর নিজস্ব ক্ষমতা নেই
📖 "রাসুলের দায়িত্ব কেবল বার্তা পৌঁছে দেওয়া।"
— (সূরা আল-মায়েদা ৫:৯৯)
➡ এখানে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, রাসুলের কাজ শুধুই আল্লাহর বিধান (কুরআন) পৌঁছে দেওয়া। তিনি নিজ থেকে কোনো আইন বা বিধান তৈরি করেননি।
📖 "আমি তো একজন মানুষ, তোমাদের মতোই। আমার প্রতি ওহী আসে যে, তোমাদের ইলাহ (প্রভু) একজনই—আল্লাহ।"
— (সূরা আল-কাহফ ১৮:১১০)
➡ রাসুল নিজেই বলেছেন যে, তিনি সাধারণ মানুষ, কিন্তু আল্লাহ তাঁকে ওহী দিয়েছেন।
২️⃣ রাসুল কারও ভাগ্য নির্ধারণ করতে পারেন না
📖 "বলুন, আমি আমার নিজের ক্ষতি বা উপকারের মালিক নই, যা আল্লাহ চান তাই ঘটে।"
— (সূরা আল-আ’রাফ ৭:১৮৮)
➡ এই আয়াতে আল্লাহ স্পষ্ট করেছেন যে, রাসুল কারও উপকার বা ক্ষতি করতে পারেন না, কারণ তিনি আল্লাহ নন।
📖 "বলুন, আমি তোমাদের কোনোরূপ ক্ষতি বা কল্যাণ করার ক্ষমতা রাখি না।"
— (সূরা আল-জিন ৭২:২১)
➡ এখানে আবার বলা হয়েছে যে, রাসুলের নিজের কোনো ক্ষমতা নেই, তিনি কাউকে সাহায্য বা ক্ষতি করতে পারেন না।
৩️⃣ আল্লাহর প্রতিনিধিত্ব কেবল তিনিই করেন
📖 "তুমি কি তাদেরকে আল্লাহ ছাড়া অন্য ওলিকে (অভিভাবক) গ্রহণ করেছো?"
— (সূরা আশ-শুরা ৪২:৯)
➡ অনেকে মনে করে যে রাসুল কোনোভাবে "আল্লাহর প্রতিনিধি" বা "মধ্যস্থতাকারী"। কিন্তু কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে যে, আল্লাহর সাথে কোনো প্রতিনিধি বা মধ্যস্থতাকারী নেই।
📖 "তাদের কারও সুপারিশ কোনো কাজে আসবে না, যতক্ষণ না আল্লাহ অনুমতি দেন।"
— (সূরা আল-আম্বিয়া ২১:২৮)
➡ শাফায়াত বা সুপারিশ করার ক্ষমতাও একমাত্র আল্লাহর হাতে, রাসুল বা অন্য কেউ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সুপারিশ করতে পারেন না।
❌ যেসব ভুল ধারণা মানুষ তৈরি করেছে
1️⃣ রাসুলের নামে দোয়া চাওয়া:
➡ অনেকে ভাবে, "ইয়া রাসুলুল্লাহ, আমাদের সাহায্য করুন!"— কিন্তু কুরআনে বলা হয়েছে, সাহায্য কেবল আল্লাহর কাছে চাইতে হবে।
📖 "তোমরা কেবল আল্লাহরই ইবাদত করো এবং তাঁকেই সাহায্য প্রার্থনা করো।" (সূরা আল-ফাতিহা ১:৫)
2️⃣ রাসুলকে অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী ভাবা:
➡ অনেকে মনে করে যে, রাসুল জান্নাত দিতে পারেন, গুনাহ মাফ করাতে পারেন, কিন্তু কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে—
📖 "গুনাহ মাফ করার মালিক একমাত্র আল্লাহ।" (সূরা আলে ইমরান ৩:১৩৫)
3️⃣ রাসুলকে আল্লাহর প্রতিনিধি বলা:
➡ কুরআনে কোথাও রাসুলকে "আল্লাহর প্রতিনিধি" বলা হয়নি। বরং বলা হয়েছে—
📖 "আল্লাহ তাঁর সিংহাসনে (আরশে) প্রতিষ্ঠিত" (তিনিই সবকিছুর পরিচালক)।" (সূরা ত্বাহা ২০:৫)
✅ তাহলে রাসুলের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত?
✔ তাঁকে একজন নবী ও রাসুল হিসেবে সম্মান করতে হবে।
✔ তাঁর আনুগত্য মানে কুরআনের বিধান মেনে চলা।
✔ তাঁকে আল্লাহর সমান বা প্রতিনিধি ভাবা যাবে না।
✔ সকল ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর হাতে, রাসুলের হাতে নয়।
📖 "আল্লাহর সাথে অন্য কাউকে ডাকো না।"
— (সূরা আল-জিন ৭২:১৮)
👉 তাহলে, রাসুলের প্রতি সত্যিকারের ভালোবাসা ও সম্মান দেখাতে হলে কুরআনের পথেই থাকতে হবে। 🚀
📌 কুরআনের বাইরে অতিরিক্ত ধর্মীয় বিধান তৈরি করা—এর অর্থ কী?
অতিরিক্ত বিধান তৈরি করা মানে:
👉 আল্লাহ কুরআনে যা নির্ধারণ করেননি, মানুষ যদি সেটিকে "ধর্মীয় বাধ্যতামূলক বিধান" বানিয়ে ফেলে, তাহলে তা অতিরিক্ত বিধান সৃষ্টি করা হয়।
📖 "তারা কি আল্লাহ ছাড়া অন্য কোন শরীয়তদাতা আছে বলে মনে করে? অথচ আল্লাহই হলেন একমাত্র বিধানদাতা।"
— (সূরা আশ-শুরা ৪২:২১)
➡ এই আয়াতে স্পষ্ট বলা হয়েছে, ধর্মীয় বিধান দেওয়ার অধিকার কেবল আল্লাহর, অন্য কারও নয়।
🚨 কুরআনের বাইরে অতিরিক্ত বিধান আসলে কীভাবে তৈরি হয়?
কিছু মানুষ নিজেদের মনগড়া নিয়ম, হাদিস, ফতোয়া বা ইমামদের মতামতকে কুরআনের সমান করে নেয় এবং সেগুলোকে বাধ্যতামূলক মনে করে।
❌ অতিরিক্ত বিধানের কিছু উদাহরণ:
১️⃣ বিবাহের জন্য অতিরিক্ত শর্ত আরোপ করা
➡ কুরআনে বিবাহের নির্দিষ্ট নিয়ম দেওয়া হয়েছে (সূরা আন-নিসা ৪:৩-৪), কিন্তু অনেকে বলে—
❌ "এই বিশেষ মাযহাবের অনুসারী না হলে বিয়ে বৈধ হবে না।"
❌ "তিন তালাক একসাথে দিলে তালাক কার্যকর হয়ে যাবে।"
📖 "হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান পরিবর্তন কোরো না।"
— (সূরা আল-মায়েদা ৫:৮৭)
➡ মানুষ যদি আল্লাহর বিধান পরিবর্তন করে নতুন নিয়ম বানায়, তবে সেটি হারাম।
২️⃣ ইবাদতে অতিরিক্ত শর্ত তৈরি করা
➡ কুরআনে নামাজ, রোজা, যাকাত ও হজের বিধান দেওয়া হয়েছে। কিন্তু অনেকে নতুন বিধান যোগ করে, যেমন—
❌ "নামাজের আগে এই বিশেষ দোয়া পড়তেই হবে, না পড়লে নামাজ হবে না।"
❌ "ফজরের পর সূর্য ওঠার আগে ঘুমালে ঈমান নষ্ট হয়ে যায়!"
❌ "একটা নির্দিষ্ট রাতেই কবরের আত্মারা ফিরে আসে, তাই সে রাতে বিশেষ আমল করতে হবে।"
📖 "আল্লাহ দ্বীনের মধ্যে কঠোরতা চান না, তিনি সহজত্ব চান।"
— (সূরা আল-বাকারা ২:১৮৫)
➡ কুরআনে যা নেই, তা বাধ্যতামূলক মনে করা ভুল।
৩️⃣ খাদ্য ও পোশাক নিয়ে কুরআনের বাইরে বিধান তৈরি করা
➡ কুরআনে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র হারাম করা হয়েছে মৃত পশু, রক্ত, শুকরের মাংস ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গকৃত খাবার। (সূরা আল-মায়েদা ৫:৩)
❌ কিন্তু কেউ যদি বলে,
❌ "মাছ খাওয়া ঠিক না, এটা শরীরের জন্য খারাপ।"
❌ "শুধু এই ধরনের পোশাক পরলে ইবাদত গ্রহণ হবে।"
📖 "বলুন, আল্লাহর দেওয়া রিজিকের মধ্যে কোনটি হারাম করেছেন তোমরা?"
— (সূরা আল-আ'রাফ ৭:৩২)
➡ যে জিনিস আল্লাহ হারাম করেননি, তা হারাম বানানোর অধিকার মানুষের নেই।
✅ ইসলাম কি শুধু কুরআনের উপর ভিত্তি করেই চলবে?
✔ হ্যাঁ, কারণ কুরআন নিজেই বলছে, এটা সম্পূর্ণ।
📖 "আমি এই কিতাবে কোনো কিছুই বাদ দেইনি, সব কিছুই বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করেছি।"
— (সূরা আল-আন'আম ৬:৩৮)
📖 "আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পূর্ণ করে দিলাম।"
— (সূরা আল-মায়েদা ৫:৩)
➡ যখন আল্লাহ বলছেন যে দ্বীন পূর্ণ, তখন বাড়তি বিধান কেন দরকার?
🚀 উপসংহার
✅ ধর্মীয় বিধান শুধুমাত্র কুরআন থেকে আসতে হবে।
✅ কোনো মানুষ, ইমাম বা ফতোয়া দাতা নতুন বিধান তৈরি করতে পারে না।
✅ যে জিনিস কুরআনে নেই, সেটাকে "ধর্মীয় বাধ্যতামূলক বিধান" বানানো শিরক ও বিদআত।
📖 "তারা আল্লাহকে ছেড়ে তাদের পণ্ডিত ও সাধুদেরকে প্রভু বানিয়ে নিয়েছে।"
— (সূরা আত-তাওবা ৯:৩১)
👉 তাই কুরআনের বাইরে অতিরিক্ত বিধান বানালে সেটি আল্লাহর দেওয়া দ্বীন থেকে দূরে সরে যাওয়ার নামান্তর। 🚀
📌 রাসুলের নামে ভিত্তিহীন কথা ও গল্প বিশ্বাস করা—এর অর্থ কী?
📖 "এটি অত্যন্ত গৌরবময় কিতাব; এতে মিথ্যার প্রবেশ নেই—না সামনে থেকে, না পেছন থেকে।"
— (সূরা ফুসসিলাত ৪১:৪১-৪২)
➡ আল্লাহ স্পষ্ট বলেছেন যে, সত্যের একমাত্র উৎস কুরআন। কিন্তু মানুষ কুরআনের পরিবর্তে রাসুলের নামে বিভিন্ন মনগড়া কথা ও গল্প বিশ্বাস করে, যা কুরআনের বিপরীত।
🚨 ভিত্তিহীন গল্প ও মনগড়া কথার কিছু উদাহরণ
১️⃣ রাসুল অলৌকিকভাবে চাঁদ দ্বিখণ্ডিত করেছেন!
❌ বলা হয় যে, রাসুল আঙুল দেখিয়ে চাঁদকে দুই ভাগ করেছিলেন।
📖 কিন্তু কুরআনে কোথাও বলা হয়নি যে, রাসুল চাঁদকে দুই ভাগ করেছেন। বরং বলা হয়েছে:
👉 "কিয়ামত নিকটবর্তী, আর চাঁদ বিদীর্ণ হয়েছে।" (সূরা আল-কামার ৫৪:১)
➡ এখানে আল্লাহ ভবিষ্যতের একটি বিষয় বলেছেন। কিন্তু কিছু মানুষ এটাকে রাসুলের অলৌকিক ক্ষমতা হিসেবে প্রচার করেছে।
২️⃣ রাসুল জান্নাতের চাবির মালিক!
❌ বলা হয়, "রাসুল যাকে ইচ্ছা জান্নাতে পাঠাবেন!"
📖 কিন্তু কুরআনে স্পষ্ট বলা হয়েছে:
👉 "কেউ কারও জন্য সুপারিশ করতে পারবে না, আল্লাহ যার জন্য অনুমতি দেন শুধু সে ছাড়া।" (সূরা আল-বাকারা ২:২৫৫)
➡ রাসুল নিজে কারও জান্নাত-জাহান্নাত নির্ধারণ করতে পারেন না, কারণ এটি আল্লাহর ইচ্ছাধীন।
৩️⃣ রাসুলের ছায়া ছিল না!
❌ অনেকে বলে, "রাসুল এত পবিত্র ছিলেন যে তাঁর ছায়া ছিল না!"
📖 কিন্তু কুরআনে আল্লাহ বলেন:
👉 "তুমি কি দেখো না, আল্লাহ কিভাবে ছায়াকে প্রসারিত করেন?" (সূরা আল-ফুরকান ২৫:৪৫)
➡ এই ধরনের কথা কুরআনের বিপরীত ও কুসংস্কারপূর্ণ।
📌 রাসুলের নামে ভিত্তিহীন কথা ছড়ানো কেন ভয়ংকর?
📖 "তোমরা যা জানো না, তা আল্লাহর নামে বলো না।"
— (সূরা আল-আ'রাফ ৭:৩৩)
📖 "আর যে ব্যক্তি আমার নামে মিথ্যা কথা তৈরি করে, সে যেন জাহান্নামে তার আসন ঠিক করে নেয়।"
— (সহিহ বুখারি, হাদিস ১০৯)
➡ রাসুল নিজেই বলেছেন, তাঁর নামে মিথ্যা বানালে শাস্তি হবে!
✅ তাহলে রাসুল সম্পর্কে সত্য জানার একমাত্র উপায় কী?
📖 "এ কুরআন সত্য প্রতিষ্ঠা করে এবং যা কিছু এর সামনে আছে তা নিশ্চিত করে।"
— (সূরা ইউনুস ১০:৩৭)
✔ কোনো তথ্য সত্য কি না যাচাই করতে হলে, কুরআনের সাথে মিলিয়ে দেখতে হবে।
✔ যদি কোনো গল্প বা হাদিস কুরআনের বিপরীত হয়, তবে তা গ্রহণ করা যাবে না।
📖 "সত্য এসেছে, আর মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা ধ্বংস হবেই।"
— (সূরা আল-ইসরা ১৭:৮১)
👉 তাহলে, রাসুলের নামে ভিত্তিহীন কথা ও গল্প বিশ্বাস করা মানেই মিথ্যাকে প্রশ্রয় দেওয়া, যা ইসলামবিরোধী। 🚀
No comments:
Post a Comment