আমি আল্লাহকে দেখিনাই তাহলে বিশ্বাস করবো কিভাবে ?
—যাকে দেখিনি, তাকে বিশ্বাস করবো না। এটা একটা যৌক্তিক দাবি, কারণ কোরআন নিজেই বলেছে "যে বিষয়ে জ্ঞান নেই, তা অনুসরণ কোরো না" (১৭:৩৬)।
তাহলে প্রশ্ন হলো: যা দেখা যায় না, তা কীভাবে বিশ্বাস করবো?
আপনার দাবির ভিত্তি হলো "দেখা"—মানে, কোনো কিছুকে সত্যি মনে করতে হলে আগে সেটাকে চোখে দেখতে হবে। এখন প্রশ্ন হলো:
✅ সব সত্য কি কেবল চোখে দেখেই নিশ্চিত হওয়া যায়?
✅ যা দেখা যায় না, কিন্তু তার প্রভাব বাস্তবে স্পষ্ট, সেটাকে কীভাবে যাচাই করা যায়?
১. সব সত্য কি চোখে দেখা যায়?
আমাদের চারপাশে অনেক জিনিস আছে যা আমরা চোখে দেখতে পাই না, কিন্তু আমরা সেটার অস্তিত্ব স্বীকার করি। যেমন:
-
মাধ্যাকর্ষণ শক্তি (Gravity): আমরা এটা দেখি না, কিন্তু টেস্ট করে বুঝতে পারি।
-
বাতাস: বাতাস দেখি না, কিন্তু অনুভব করতে পারি।
-
চেতনা (Consciousness): আপনি কিভাবে জানেন যে আপনি "বেঁচে" আছেন? চেতনা দেখা যায় না, কিন্তু অনুভূত হয়।
-
ভালোবাসা, দুঃখ, আনন্দ: এগুলো কোনো বস্তু নয়, কিন্তু বাস্তবে টের পাওয়া যায়।
✅ অর্থ: সব সত্যকে দেখতেই হবে—এই শর্ত বাস্তবে সবক্ষেত্রে প্রযোজ্য নয়।
২. তাহলে আল্লাহকে কীভাবে যাচাই করবো?
কোরআন বলে, "তোমরা আল্লাহর নিদর্শনগুলো দেখো" (৪১:৫৩)। আল্লাহকে চোখে দেখা সম্ভব নয়, তবে তার অস্তিত্বের প্রমাণ চারপাশে ছড়িয়ে আছে।
➡️ (ক) বিশ্বজগতের সূক্ষ্ম নকশা (Fine-tuned Universe)
-
মহাবিশ্ব এত সূক্ষ্মভাবে ডিজাইন করা যে, একটু পরিবর্তন হলে জীবন সম্ভব হতো না।
-
পৃথিবীর গতি, সূর্যের দূরত্ব, অক্সিজেনের পরিমাণ—সবকিছু নিখুঁত।
-
প্রশ্ন হলো, এটি কি এমনি এমনি হলো, নাকি এর পেছনে কোনো কারণ আছে?
✅ কোরআন বলছে:
“তারা কি লক্ষ্য করেনি আকাশ ও পৃথিবীর রাজত্বের দিকে এবং আল্লাহ যা কিছু সৃষ্টি করেছেন?” (৭:১৮৫)
➡️ (খ) জীবন ও সৃষ্টির উদ্দেশ্য
-
কেন আমি এখানে?
-
কেন মৃত্যু আসে?
-
কেন আমি ন্যায়-অন্যায় বুঝতে পারি?
✅ কোরআন বলছে:
“আমি আকাশ, পৃথিবী এবং তাদের মধ্যবর্তী সবকিছু উদ্দেশ্যহীন সৃষ্টি করিনি।” (৩৮:২৭)
✅ যদি আল্লাহ না থাকতেন, তাহলে—
-
কিভাবে জীবনের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করা যায়?
-
কিভাবে নৈতিকতা ও সত্য-মিথ্যার ধারণা এসেছে?