চার বিবাহের অনুমতি কি কোরআন দিয়েছে ?
ইয়াতীম মানে শুধু পিতৃহীন শিশু নয় — এক সমাজবিচ্ছিন্ন সত্তা
‘ইয়াতীম’ শব্দটি এসেছে আরবি "يَتِمَ" (yatama) ধাতু থেকে।
একাকী, নির্ভরযোগ্য অভিভাবকহীন, নিরাপত্তাহীন, বিচ্ছিন্ন।
কোরআন কখনও শুধু শিশু নয়, বরং 'অসহায়ত্বের চূড়ান্ত রূপ' বোঝাতে ইয়াতীম বলেছে।
যেমন:
“فَأَمَّا الْيَتِيمَ فَلَا تَقْهَرْ”
“অতএব ইয়াতীমের প্রতি অবজ্ঞা কোরো না।”
(সূরা আদ-দুহা, আয়াত ৯)
এখানে ‘ইয়াতীম’ কে কেবল পিতৃহীন শিশু হিসাবে সীমাবদ্ধ করা হয়নি, বরং অসহায় ও নিঃসঙ্গ যে কেউ — তাকে আঘাত না করতে, অপমান না করতে আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন।
এর মূল অর্থ — বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়া, সহযোগিতা বা আশ্রয় থেকে বঞ্চিত হওয়া, নিরাশ্রয় হয়ে একাকী থাকা।
ইয়াতীম যে কেউ হতে পারে পুরুষ ,মহিলা , শিশু , হিজড়া , যে কোনো ক্ষতিগ্রস্থ পশু-পাখি ।
ইয়াতীম মানে মোল্লারা বানিয়েছে মহিলাদের, যাদের এখনো যৌবন আছে ভোগ করা যাবে।
সমাজের কিছু মোল্লা, নেতা বা তথাকথিত ধার্মিক ব্যক্তি — নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গিকে একেবারে "যৌন-ভোগের বস্তুতে" নামিয়ে এনেছে।
তাদের ভাষায়:
-
"অসহায় নারীকে সাহায্য করবো" মানে = বিয়ে করবো
-
"একাধিক বিয়ে করা সুন্নাত" মানে = যাকে ইচ্ছা, সুযোগ পেলেই বিয়ে করা যায়। .সুন্নাত কাকে বলে এখন থেকে জেনে নিবেন
এই ব্যাখ্যা ভণ্ডামি, ধর্মের নাম নিয়ে যৌনতার বৈধতা খোঁজা।
যদি মোল্লা বা কোনো ধার্মিক ব্যক্তি বলে:
"আমি অসহায়দের সাহায্য করি" —তাহলে জিজ্ঞেস করতে চাই :
-
কেন অসহায় ছেলে ইয়াতীমদের ঘরে তুলে নাও না?
কেন অসহায় তৃতীয় লিঙ্গের(হিজড়া) মানুষদের ঘরে তুলে নাও না?
-
কেন বয়স্ক পুরুষ/মহিলাদের ভিক্ষুকদের খাবারের দায় নাও না?
কেন অসহায় ছেলেদের দায়িত্ব নাও না ?
-
কেন রাস্তার শিশুদের আশ্রয় দাও না?
-
কেন ক্ষতিগ্রস্থ প্রাণীর দেখভাল করো না?
কেন যারা প্রকৃত অসহায় নারী রাস্তায় ঘুরে বেড়ায় তাদের দায়িত্ব নাও না বা বিয়ে করো না ?
তাদের "দয়া" কেবল তখনই জাগে — যখন নারীর শরীরের প্রবেশাধিকার আসে।
এইটা ভণ্ডামি, আত্মপক্ষ সমর্থনের মিথ্যা ধর্মচর্চা।
ধর্মের নামে ভণ্ডামি: কিছু মানুষ 'অসহায় নারীকে সাহায্য' করার অজুহাতে একাধিক বিয়ে করে, কিন্তু তারা প্রকৃত ইয়াতীমদের পাশে দাঁড়ায় না।
সামাজিক অবিচার: হিজড়া, মানসিক ভারসাম্যহীন, বেওয়ারিশ শিশু ও পশুদের প্রতি সমাজের অবহেলা, যারা কোরআনের দৃষ্টিতে ইয়াতীম।
কোরআনের প্রকৃত বার্তা: সূরা আদ-দুহা ও সূরা আল-মাউন-এ ইয়াতীমদের প্রতি সদয় আচরণ ও তাদের অধিকার রক্ষার নির্দেশনা রয়েছে।
তথাকথিত মোল্লা খালি বিয়ের সংখ্যা, লম্বা দাঁড়ি, হুকুম-হালাল নিয়ে লাফায় — এটা এক নির্মম সত্য।
কিন্তু কুরআন যা চায় তা হলো:
"আর তুমি ইয়াতীমকে অবহেলা করো না।" (সূরা আদ-দুহা, 9)
"তুমি কি তাকে দেখোনি যে দ্বীনকে মিথ্যা বলেছে? সে সেই ব্যক্তি যে ইয়াতীমকে তাড়িয়ে দেয়, আর মিসকিনদের খাবারের ব্যবস্থা করে না।" (সূরা আল-মাউন)
এই কথাগুলো সোজাসুজি বলছে — যদি তুমি ইয়াতীম, মিসকিন, আশ্রয়হীন, ক্ষুধার্তদের দায়িত্ব না নাও,
তবে তোমার নামাজ, দাড়ি, মসজিদে যাওয়া — সবই মিথ্যা, অভিনয়। সূরা নিসার তিন নম্বর আয়াতের মূল মেসেজ আড়াল করে বৈধভাবে নারীর যৌনতা ভোগ করার পন্থা বের করেছে ।